টানা দু’দিন শৈত্য প্রবাহের পর তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। মাঘের শুরুতে তাপমাত্রা উঠেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘনকুয়াশা যোগ হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেলায় কুয়াশা ভেদ করে উত্তাপ ছড়াতে পারছে না সূর্য। এমন শীত থেকে সহসা মুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। শীতের এমন অবস্থার মধ্যে চলে এসে ‘বাঘ পালানোর মাস’ মাঘ।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।

এদিকে শীতের কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগ। গত রোববার জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নে তালহা নামের এক শিশু ডায়রিয়ায় মারা গেছে। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ১২ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পর দু’দিন ১৩ জানুয়ারি ৯ দশমিক ৩ ও ১৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে এ জেলায়। সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন জেলার প্রথম শ্রেণির পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, দমকা হাওয়া বা বৃষ্টি না নামলে ঘন কুয়াশা সরবে না। আর কুয়াশা না সরলে রোদ এসে শীতের দাপট কমাতে পারবে না। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আকাশে মেঘ জমতে পারে। অনেক জায়গায় শুরু হতে পারে বৃষ্টি। বৃষ্টি চলতে পারে দু–তিন দিন। এরপর শীতের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কিছুটা বাড়বে। তখন দিনে শীতের অনুভূতি কিছুটা কমে আসবে। তবে রাতে শীতের তীব্রতা এখনকার মতোই থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, শীতের এমন পরিস্থিতি আরও চার-পাঁচ দিন থাকবে। বৃহস্পতি-শুক্রবারে কিছুটা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির পরে কুয়াশার ভাব কমবে। তাপমাত্রাও কমে শীত কিছুটা বাড়বে। ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারির আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এ সময় সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের অনেক জায়গায় দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

এই সময়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।